কূটনৈতিক প্রতিবেদক : সাতটি প্রকল্পে ৩২০ কোটি ডলারের অফিশিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট (ওডিএ) সই করেছে বাংলাদেশ-জাপান। ৪১তম ওডিএর আওতায় এ ঋণসহায়তা দিয়েছে জাপান। দুই দেশের মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় ঋণসহায়তা।
গতকাল বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে এ চুক্তি সই হয়।বাংলাদেশের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও জাপানের পক্ষে দেশটির ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি এ-সংক্রান্ত নোট বিনিময় করেন। এ পর্যন্ত ২২ বিলিয়ন ডলারের সহযোগিতা দিয়েছে জাপান।
জাপান দূতাবাস জানায়, ৪১তম ওডিএতে দশমিক ৬৫ শতাংশ সুদে ৩০ বছরের সময় দেয়া হয়েছে ঋণ পরিশোধে। সেই সঙ্গে ১০ বছরের অতিরিক্ত বা গ্রেস পিরিয়ড সময় দেয়া হয়েছে। এতে দশমিক শূন্য ১ শতাংশ পরামর্শক ফি রাখা হয়েছে।
৪১তম ওডিএতে যমুনা রেল সেতু ২ এর জন্য ৮৯ দশমিক শূন্য ১৬ বিলিয়ন ইয়েন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প ২-তে ৮০ বিলিয়ন, ঢাকা এমআরটি ৪ প্রকল্পে ৭২ দশমিক ১৯৪ বিলিয়ন, ঢাকা এমআরটি ৫ প্রকল্পে ৫৫ দশমিক ৬৯৬ বিলিয়ন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে ১ দশমিক ৯০৬ বিলিয়ন, ফুড ভ্যালু চেইন উন্নয়ন প্রকল্পে ১১ দশমিক ২১৮ বিলিয়ন এবং শহর উন্নয়ন ও শহর সুশাসন প্রকল্পে ২৮ দশমিক ২১৭ বিলিয়ন ইয়েনের চুক্তি সই করা হয়েছে।
জাপান দূতাবাস জানায়, যমুনা রেল সেতু ২ প্রকল্পটি বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) ৯ অর্জনে সহযোগিতা করবে। আগামী ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সেতুটি নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির পরামর্শক ও নির্মাণ পর্যবেক্ষক এরই মধ্যে নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রাথমিক ক্রয় নিয়ে করা দরপত্রের জন্যও চুক্তি হয়ে গিয়েছে।
বিমানবন্দরের সক্ষমতা এবং ভবিষ্যৎ চাহিদা বিবেচনায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পটিও এসডিজি ৯ অর্জনে সহযোগিতা করবে। ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে। এর মধ্যে বিমানবন্দরটি সম্প্রসারণ করা হবে। প্রকল্পটির পরামর্শক ও নির্মাণ পর্যবেক্ষক এরই মধ্যে নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রাথমিক ক্রয় নিয়ে করা দরপত্রের জন্যও চুক্তি হয়ে গিয়েছে।
ঢাকা শহরের যানজট দূর করা এবং বায়ুদূষণ কমিয়ে আনতে ঢাকা এমআরটি ৪ প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এটি এসডিজি ৯ ও ১১ অর্জনে সহযোগিতা করবে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প সমাপ্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির পরামর্শক ও নির্মাণ পর্যবেক্ষক এরই মধ্যে নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রাথমিক ক্রয় নিয়ে করা দরপত্রের জন্যও চুক্তি হয়ে গিয়েছে।
এমআরটি ৫ প্রকল্প এসডিজি ৯ ও ১১ অর্জনে সহযোগিতা করবে। ২০২৯ সালের নভেম্বরের মধ্যে প্রকল্প সমাপ্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির পরামর্শক ও নির্মাণ পর্যবেক্ষক এরই মধ্যে নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিক ক্রয় প্রক্রিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র ঘোষণা করা হয়েছে।
মাতারবাড়ী বন্দর ও চট্টগ্রামের মধ্যে যোগাযোগ উন্নয়নে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্প এসডিজি ৩ ও ৯ অর্জনে সহযোগিতা করবে। প্রকল্পটি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত করার লক্ষ্য ধরা হয়েছে। প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে এলওআই দেয়া হয়েছে।
খাদ্যনিরাপত্তা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ব্যবসায় দক্ষতা উন্নয়ন এবং কৃষি ব্যবসা ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে ঋণ সহযোগিতা উন্নয়নে ফুড ভ্যালু চেইন উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এটি এসডিজি ১, ২ ও ৮ অর্জনে সহযোগিতা করবে প্রকল্পটি সমাপ্তের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে। এ সময়ে ঋণ বিতরণ শেষ করা হবে। প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা সহযোগিতার জন্য এরই মধ্যে এলওআই দেয়া হয়েছে।
নির্দিষ্ট শহরের সুশাসন উন্নয়নে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য শহর উন্নয়ন ও শহর সুশাসন প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এটি টেকসই লক্ষ্যমাত্রা ১১ অর্জনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে। এ প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত।