ঢাকাশুক্রবার , ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দেশজুড়ে হাসিনার আত্মীয়স্বজন ও আওয়ামী নেতাদের বাড়ি ভাঙচুর ও আগুন

মাছুম কাজী :
ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫ ৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ । ২৮ জন
Link Copied!

মাছুম কাজী :

ভারতে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বক্তৃতা প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বুধবার রাতে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাপক বিক্ষোভের এক পর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। রাত ১১টার দিকে একটি ক্রেন এবং পরে একটি এক্সকাভেটর এনে বাড়ি ভাঙা শুরু হয়। ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙা ছাড়াও একই রাতে ধানমণ্ডির ৫/এ-তে অবস্থিত শেখ হাসিনার বাড়ি সুধা সদনে আগুন দেওয়া হয়। রাতে সেখানে আগুন জ্বলছিল।

সরকারের পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েকজন নেতার বাড়িতে ভাঙচুর করে এবং আগুন লাগায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
এদিকে দেশজুড়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ বন্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাসায় ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাসায় ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের খরমপট্টি এলাকায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের স্টেশন রোড, পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর ও বাজিতপুর সদরে বিভিন্ন বাসা ও প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে ভাঙচুর করে ছাত্র-জনতা। জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়।

এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বিন্নাটি চৌরাস্তা মোড়ে সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ চার নেতার ম্যুরালটি ভাঙচুর করা হয়। শামীম ওসমানের দাদার বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের দাদার বাড়ি ‘বায়তুল আমান’ এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার পর নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া এলাকার বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

এর আগে সন্ধ্যার পর শহরের মিশনপাড়া এলাকায় জড়ো হয় বিক্ষুব্ধ জনতা। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের চাষাঢ়া এলাকার বায়তুল আমানের সামনে আসে তারা।

আগে থেকে সেখানে রাখা ছিল এক্সকাভেটর। এর পরই বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। প্রথমে ভাঙা হয় বাড়িটির সীমানা। এরপর শুরু হয় ভবন ভাঙার কাজ। বিক্ষোভকারীরা বলে, বায়তুল আমান ভবনের ইতিহাসকে পুঁজি করে শামীম ওসমান ও তাঁর অনুসারীরা নারায়ণগঞ্জে একক আধিপত্য চালায়। এই বায়তুল আমানকে আওয়ামী লীগের জন্মস্থান বলা হয়ে থাকে। তাই সেই ভবন গুঁড়িয়ে দিতে একত্র হয়েছে সাধারণ মানুষ।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যেমন আওয়ামী লীগের প্রতি ক্ষুব্ধ তেমনি নারায়ণগঞ্জবাসী শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, আজমেরী ওসমান ও অয়ন ওসমানের ওপর ক্ষুব্ধ। নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের ও ওসমান পরিবারের কোনো স্থাপনা রাখতে চায় না সাধারণ জনগণ।

ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে আগুন-ভাঙচুর
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গতকাল দুপুরে বসুরহাট পৌরসভার রাজাপুরে দ্বিতল ভবন ভাঙা শুরু হয়। বিক্ষুব্ধরা পাশে ছোট ভাই শাহাদাতের বাড়ি এবং আরেক ছোট ভাই আব্দুল কাদের মির্জার দোতলা ভবনও হাতুড়ি, শাবল দিয়ে ভেঙে দেয়।

আমু ও হাসানাত আবদুল্লাহর বাসভবনে ভাঙচুর

বরিশাল ও ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ সময় আগুনও লাগানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বুধবার রাতে ওই ভাঙচুর শুরু করেন। রাতভর দুটি বুলডোজার চালিয়ে বাড়ির প্রধান ফটক, দেয়ালসহ বেশির ভাগ অংশ ভেঙে ফেলা হয়। এদিকে আমুর ঝালকাঠির বাড়ি এবং তাঁর নামে থাকা সব প্রতিষ্ঠানের নামফলক ভাঙচুর করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে শহরের রোনালসে সড়কের বাসভবন ভাঙচুর শুরু করে ছাত্র-জনতা। এর আগে ফিরোজা আমু টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাইনবোর্ড গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় পাশের ফিরোজা আমু হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের নামফলকও তারা ভাঙচুর করে।

এদিকে বরিশাল নগরীতে সেরনিয়াবাত ভবনের একটি অংশ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভবনটি শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর। সেখানে তাঁর ছেলে সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বসবাস করতেন।

সকালেও আগুন জ্বলেছে তোফায়েলের বাড়িতে

সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের ভোলার বাড়িতে গতকাল সকালেও আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। এর আগে বুধবার রাতে শহরের গাজীপুর রোডের প্রিয় কুটিরে বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর চালিয়ে আগুন জ্বালায়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভোলা সদর রোড থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা একটি মিছিল নিয়ে শহরের গাজীপুর রোডে আসে। এ সময় তারা তোফায়েল আহমেদের বাড়ির ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ঘরের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে। এ সময় কিছু বিক্ষুব্ধ জনতা ঘরে প্রবেশ করে আসবাবে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং কিছু আসবাব বাইরে সড়কের ওপর এনে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। একই সঙ্গে বাড়ির নিচতলা ও দোতলায় আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।

সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে হামলা, আগুন

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর এলাকায় সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে তাঁর ছোট ভাইয়ের বাসভবনে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের এই ঘটনা ঘটে। একই সময় পাশের চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেনের বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের পৃথক দুটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

তবে এই হামলা-ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের ঘটনার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন সংগঠনটির নোয়াখালী জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম। গত রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, চৌমুহনীর ঘটনাটি সেখানকার স্থানীয় রাজনৈতিক ঘটনা। এর সঙ্গে ছাত্রদের কোনো সম্পর্ক নেই।

রাজশাহীতেও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

রাজশাহীতে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাড়ি, প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুুব্ধ ছাত্র-জনতা। বুধবার রাত ৯টার দিকে শুরু হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। গতকাল দুপুরে বাঘা উপজেলা সদর ও চারঘাটের দিক থেকে শতাধিক মোটরসাইকেলযোগে এসে বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা বাঘার ছাতারী এলাকায় শাহরিয়ার আলমের গার্মেন্টস শ্রমিকদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রও ভাঙচুরসহ আগুন দিয়েছে।

এ ছাড়া বুধবার রাতে খুলনার শেখবাড়ি ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। গভীর রাত পর্যন্ত ভাঙচুর চলে। এরই মধ্যে বাড়ির ছাদে এক গ্রুপ আগুন ধরিয়ে দেয়।

মাদারীপুর শহরে আওয়ামী লীগের কার্যালয় গতকাল ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। বুধবার রাতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং শেখ হাসিনা হলের নামফলক ভেঙে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

পিরোজপুরে সাবেক এমপি এ কে এম এ আউয়াল এবং তাঁর ভাই পৌরসভার সাবেক মেয়র হাবিবুর রহমান মালেকের বাড়িতে ভাঙচুরের পর আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শেখ রাসেল আবাসিক হলের নামফলকও মুছে ফেলা হয়েছে।

গতকাল বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়। নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই ভাঙচুর করে।

বিভিন্ন স্থানে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভাঙচুর

চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ রাসেলের ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে বিক্ষুুব্ধ ছাত্র-জনতা। গত বুধবার রাতে নগরের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ এবং জামাল খান এলাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। একই রাতে রাউজানে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও (চুয়েট) ভাঙচুর করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেলের ম্যুরাল।

বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের পুরনো একাডেমিক ভবনের সামনের একটি ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে বিক্ষুুব্ধ ছাত্ররা। এরপর সেখান থেকে মশাল মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতা নগরের জামাল খান এলাকায় যায়। সেখানে খাস্তগীর স্কুলের দেয়ালে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি হাতুড়ি দিয়ে ভাঙে তারা।

এদিকে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। রংপুরে বুধবার রাতে বুলডোজার দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের তিনটি ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও সাধারণ ছাত্র-জনতা। এ সময় বিক্ষুব্ধরা নামফলকসহ ম্যুরালে লেখা শেখ মুজিবের বাণী মুছে দিয়েছে।

ময়মনসিংহ নগরীর সার্কিট হাউস ভবন সংলগ্ন ম্যুরালটি বুধবার রাতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া ছেলেদের আবাসিক হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নামফলক খুলে ফেলেছেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। বুধবার রাতে এ ঘটনাগুলো ঘটে।

চুয়াডাঙ্গায় বুধবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগ অফিস এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে গতকাল শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ফের ভাঙচুর করা হয়েছে। ভৈরব উপজেলা পরিষদ চত্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল বুধবার রাতে ভাঙচুর করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে দুই আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ির পাকা তোরণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল উপজেলা সদরের আলোছায়া মোড়ে শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক তিন রাষ্ট্রপতির ম্যুরাল ও মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যে ভাঙচুর চালানো হয়।

কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল গতকাল গুঁড়িয়ে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এর আগে সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিনের বাড়ি এবং মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মুজিব ম্যুরাল ভেঙে ফেলেছেন শিক্ষার্থীরা।

পটুয়াখালী জেলা পরিষদের সামনে ও র‌্যাব ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে শিক্ষার্থী-জনতা। বুধবার রাতে এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ভাঙচুর করা হয়। সর্বশেষ ভাঙচুর করা হয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচে থাকা বঙ্গবন্ধু কর্নার।

কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা পরিষদ ও ত্রিমোহনী বাজারে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল গতকাল ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

ঝিনাইদহে শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি ম্যুরাল ভাঙচুরের পর তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে এবং বুধবার রাতে চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বুধবার রাতে সাভার পৌরসভার মুক্তির মোড়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় ম্যুরালের তিন পাশে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির কিছু অংশ হাতুড়ি ও ধাতব বস্তু ব্যবহার করে বিকৃত করে দেওয়া হয়।

ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

অন্তর্বর্তী সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে যে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করছে। সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ড শক্তভাবে প্রতিহত করবে।

অন্তর্বর্তী সরকার নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রস্তুত। কোনো ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হলে দায়ী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তাত্ক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেবে এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবে।

You cannot copy content of this page