নিজস্ব প্রতিনিধি :
অন্তর্বর্তী সরকার দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এই সংস্কার প্রয়োজন, সেটি বিএনপিও মনে করে। তাই ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব কয়েক মাস আগেই তৈরি করেছে বিএনপি, যা ইতিমধ্যে সবাই জেনেছে। এমনটাই বলেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, নির্বাচন দেরি হলে ষড়যন্ত্রই কেবল বাড়বে। শনিবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ভারপ্রাপ্ত চেয়োরম্যান।
তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি দেশ ও দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে বলেই আজ থেকে তিন-চার মাস আগে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিল।’ দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের গুরুত্বের কথা বলতে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশে ষড়যন্ত্র তত বেশি বাড়বে। যে দেশের রাজনীতি অসুস্থ সে দেশের প্রতিটা সেক্টরই অসুস্থ।’
যারা দলের বিভিন্ন স্তরে দায়িত্ব নেবেন তাদের একজন দায়িত্বশীল নেতা ও একজন দায়িত্বশীল মানুষ হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান। বলেন, ‘ভোটের মাধ্যমে যখন একজন ব্যক্তি দলের কোনো দায়িত্বে আসেন, তখন তিনি দলের নেতা-কর্মীদের সঠিকভাবে দেখভাল করেন। দলের কাজগুলো সঠিকভাবে হচ্ছে কি না সেগুলো দেখার জন্য আমরা একজন নেতা নির্বাচন করে থাকি। নেতা নির্বাচন হলে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড মজবুত হয়।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনাকে বুঝতে হবে আপনার এলাকার মানুষের প্রত্যাশা। দায়িত্ব নিয়ে আপনার এলাকার মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে।’ নিজেকে শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার সৈনিক মনে করে দায়িত্বশীলভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের তাগিদ দেন তিনি।
এর আগে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, কুষ্টিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মেহেদী হাসান রুমি প্রমুখ।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির উপ-কোষাধ্যক্ষ মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্ব এবং জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুল বারী হেলাল, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুণ ও সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ।
এর আগে সকাল ১০টার মধ্যে সম্মেলনস্থল টাউন ফুটবল ময়দান নেতাকর্মীদের সমাগমে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। বেলা পৌনে ১১টার দিকে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্য নেতারা মঞ্চে আসন গ্রহণের পর জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) দলীয় সংগীত পরিবেশন করে। বিভিন্ন সময় আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত দলের নেতা-কর্মীদের স্মরণে মঞ্চে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ওয়াহেদুজ্জামান।
সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ছাত্র-জনতা, বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের প্রয়াত সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়। পরে সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জেলা বিএনপির সদস্য খন্দকার আবদুল জব্বার।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির সদস্য মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এম এ তালহা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ জাহান খান, জাসাস চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবীব, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ, জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রউফুন নাহার, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক তবারক আলী।