প্রাণের বাংলাদেশ ডেস্ক :
৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর বিজয়ের মিছিলে তাদের সকল কার্যক্রমে বিএনপির একাত্ত্বতা পাল্টে দেয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। পালিয়ে যায় ফ্যাসিস্ট সরকার।
দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা, সরকারী দলের নানা কৌশলে পরাস্ত হওয়া এবং পুলিশের দায়ের করা বিভিন্ন মামলার কারণে অনেকটা ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং এর অংগসংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
মূল দল থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি সহযোগী ও অঙ্গ-সংগঠনের অদূরদর্শী নেতৃত্ব দলকে আরও পিছনে নিয়ে যাচ্ছিল বলে মনে করতেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল। ফলে ব্যাহত হচ্ছিল দলীয় কার্যক্রম, আন্দোলন, সংগ্রাম সবকিছুই।
তারপরও বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কিছু নেতা দুঃসময়ের কান্ডারী হয়ে আছেন নেতাকর্মীদের পাশে। এমনটাই মনে করেন তৃণমুলের নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন সাবেক সহ-সভাপতি, জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটি ও বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক ঢাকা মহানগর উত্তর। তিনি বিগত দিনে ঢাকা ১৮ আসন থেকে বিএনপির হয়ে এমপি নির্বাচনও করেন।
নেতাকর্মীদের মতে, বিএনপি সরকারের সময়ের অনেক বাঘা বাঘা নেতারা আওয়ামী লীগের আমলে কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেদের বাঁচাতে আড়ালে আবডালে থেকেছেন। কেউবা আবার সরকারী দলের সাথে আতাত করেছেন। ঠিক তখনও এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন সময়ের সাহসী সৈনিক হয়ে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন এবং বর্তমানেও রয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ছাত্র জীবন থেকে জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শ বুকে লালন করে তেজগাঁও কলেজের ভিপি নির্বাচিত হয়ে হাজারও ত্যাগ তিতিক্ষা জেল জুলুম সহ্য করে এখন পর্যন্ত তার রাজনৈতিক মতাদর্শ রয়েছে সকলের শীর্ষে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপির জন্য দুঃসময়ে নিজের বুক পেতে দিয়েছেন তিনি। ছাত্রদলের বিভিন্ন পদ পদবীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে প্রায় সকল আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রদল ও বিএনপিকে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। নেতাকর্মীদের নিয়ে সর্বদা রাজপথে থাকতে গিয়ে অনেক মামলায় আসামী হয়েছেন। এছাড়া গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন বেশ কয়েকবার। তারপরও থামানো যায়নি তাকে।
নির্দলীয় সরকার ও দ্রব্যমূল্য ঊর্ধগতি এর প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ ও সরকারি দলীয় ক্যাডার বাহিনীর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে বেশ কয়েকবার হাসপতালে ভর্তি হন তিনি। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ঢাকার রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ও ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার দাবিতে সমাবেশসহ দলীয় সকল কাজকর্মে এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনকে যে দায়িত্ব দিয়েছি সে তা পালনের চেষ্টা করেছে এবং এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সময় অনেকভাবে সে নির্যাতিত হয়েছে,মামলা খেয়েছে, জেল খেটেছে। তারপরও কিছু করার নেই, দলের দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে তাকে। এরাই দলের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশের সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার পতন হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আবু সাঈদ, ওয়াসিম ও মুগ্ধর মতো অনেক মেধাবী ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে আজ আমরা পেয়েছি নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ। আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রাণ দেওয়া সকল শহীদদের ও আহত সকল সম্মুখ ভাগের যোদ্ধাদের। তাদের আত্মত্যাগেই আমরা পেয়েছি নতুন বাংলাদেশ।
আমি আরও স্মরণ করতে চাই, গত দেড় যুগ ধরে চলমান স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও গুম হওয়া বিএনপির হাজারো নেতাকর্মীদের; তারা জীবন দিয়ে এই আন্দোলনের পটভূমি রচনা করে গেছেন।
তিনি বলেন, জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ছাত্রদের পাশাপাশি আমাদের নেতাকর্মীরা ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করে। আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই উত্তরা থেকে ডিবি পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে নির্মমভাবে অত্যাচার করে। তীব্র আন্দোলনের মুখে হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর গত ৬ আগস্ট আমি মুক্তি লাভ করি। স্বৈরশাসনের অত্যাচারে জর্জরিত সকল শ্রেণি পেশার মানুষ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাস্তার নেমে আসার কারণে সফলতার মুখ দেখতে পেয়েছে। এই আন্দোলনে মূল চাবিকাঠি ছিল বৈষম্যহীন এক পরিবর্তিত নতুন বাংলাদেশ। এই পরিবর্তন হলো গত ১৬ বছরের জুলুম অত্যাচার, চাঁদাবাজি, জবরদখলের পরিবর্তন।
|| প্রকাশক ও সম্পাদক : আব্দুল্লাহ আল মামুন || নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস জয় ||
Copyright © 2024 আমার প্রাণের বাংলাদেশ. All rights reserved.You cannot copy content of this page